চট্টগ্রামের সবচেয়ে শান্ত জেলা হিসেবে পরিচিত বান্দরবান। হঠাৎ করেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান। গত ছয় মাসে বাংলাদেশ-মিয়ানমার ও ভারত সীমান্ত সন্নিহিত এই জেলায় নিজেদের মধ্যে হানাহানি ও তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একের পর এক লাশ পড়ছে। গোলাগুলির আওয়াজে কেঁপে উঠছে পাহাড়ি গ্রামগুলো। একসময় আঞ্চলিক রাজনীতির বিরোধে জর্জরিত ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামের উত্তরের জেলা খাগড়াছড়ি।
এরপর আঞ্চলিক রাজনীতির বিরোধ এবং এলাকায় আধিপত্য বজায় রাখার লড়াইয়ে তছনছ হয়ে যেতে থাকে মধ্যভাগে অবস্থিত রাঙামাটি। সে সময়ে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি থেকে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন জনজাতির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ শান্তির জায়গা হিসেবে বিবেচিত বান্দরবান চলে আসে। এখন সেই সব শান্তিপিয়াসির মধ্যেই সংঘাতের আগুন জ্বলে উঠেছে। অনেকেই নিরাপত্তার শঙ্কায় ঘর ছেড়ে জেলা সদরে ঠাঁই গেড়েছে।
জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং তৃণমূলের একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘একই পাড়ায় তিন-চারটি সংগঠনের ক্যাডার রয়েছে। এ কারণে এখন পাহাড়ের প্রতিটি পাড়ায়ই জীবনযাপন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ’ তিনি বলেন, রোয়াংছড়ি উপজেলার তারাছা তালুকদারপাড়ায়ই গত দুই-তিন বছরে সাত-আটটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। ছোট্ট এই গ্রামটি শোকের ভার আর সইতে পারছে না।
তিনি বলেন, ‘গত ৫ মার্চ জনসংহতির মূল অংশের উনু মং মারমাকে গুলি করে তুলে নিয়ে গেছে কমব্যাট ইউনিফর্ম পরা ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত একটি গ্রুপ।
বান্দরবান জেলাকে কারা কী কারণে হঠাৎ করে অশান্ত করে তুলেছে—সে বিষয়ে নিরাপত্তা বাহিনী, পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অন রেকর্ডে কোনো কথা বলতে চাইছেন না। গত রবিবার সকালে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বান্দরবানের পুলিশ সুপার জেরিন আখতার জানান, কারা কী কারণে এ ধরনের হত্যাকাণ্ডে মেতে উঠেছে, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছেন না তিনি। তিনি বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে বর্তমানে চারটি সংগঠনের বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গ্রুপ রয়েছে বলে জানতে পেরেছি। জননিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে আমরা নতুন করে পরিকল্পনা নিচ্ছি।