গত ২৪ ডিসেম¦র ১৯৯৩ ইং তারিখে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানাধীন মানিকপুর বাজারে কেরাম খেলাকে কেন্দ্র করে দু গ্রুপের সংঘর্ষ চলাকালীন ভিকটিম সায়েদুল হককে আসামী লেয়াকত আলী এবং কতিপয় দুস্কৃতিকারী লাঠি এবং ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ভিকটিমের মাথা এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নির্মমভাবে আঘাত করে গুরুতর আহত করে। পরবর্তীতে গুরুতর আহত ভিকটিমকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে প্রথমে চকরিয়া উপজেলা হাসপাতাল এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরবর্তীতে ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে লেয়াকত আলী এবং আরও ৪/৫ জনকে আসামী করে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং ২৫(১২)৯৩, জিআর ২৭৬/৯৩ তারিখ ২৫ ডিসেম¦র ১৯৯৩ ধারা ৩০২/৩০৪/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। মামলা দায়েরের পর হতে বর্ণিত হত্যাকান্ডের প্রধান আসামী লেয়াকত আলী আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়। দীর্ঘদিন পলাতক থাকায় বিজ্ঞ আদালত আসামীর অনুপস্থিতিতে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামীকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরধারী এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরধারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, বর্ণিত আসামী চট্টগ্রাম মহানগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন নাসিরাবাদ এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত ০১ মে ২০২৩ ইং তারিখ ১৩১৫ ঘটিকায় বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামী লেয়াকত আলী (৫০), পিতা- মৃত মোঃ হোছন, সাং- মানিকপুর, থানা- চকরিয়া, জেলা- কক্সবাজারকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে বর্ণিত মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মর্মে স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় সে আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে দীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ চট্টগ্রাম মহানগরীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে ছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাবাসাবাদে আরও জানা যায় ১৯৯৩/৯৪ সালের দিকে ধৃত আসামীর বড় ভাই হাশেম মেম্বার ও তৎকালীন মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান এলাকায় প্রভাব বিস্তারকারী সক্রিয় দুটি গ্রুপ ছিল। ধৃত আসামী লেয়াকত আলী তার বড় ভাই হাশেম মেম্বার এর গ্রুপের নেতৃত্ব দিত এবং এলাকায় প্রভাব বিস্তার করার জন্য বিভিন্ন নাশকতামূলক কাজ করত। এছাড়া এ দু গ্রুপের মধ্যে প্রায় সময়ই সংঘর্ষ লেগে থাকত যার প্রধান উস্কানীদাতা ছিল আসামী লেয়াকত আলী। উক্ত সংর্ঘষের কারণে স্থানীয় জনসাধারণ ভীতি ও শংকার মধ্যে জীবন যাপন করত।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।