আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি চট্টগ্রাম ক্যাম্পাসে ৫৫তম ব্যাচের ক্যাডেটদের ‘মুজিববর্ষ গ্রাজুয়েশন প্যারেড’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি তৈরি করে দিয়ে যান। আমরা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে এটাকে সচল করার এবং আরও উন্নত করার উদ্যোগ নেই। আমরা এর শিক্ষা ব্যবস্থা ডিজিটাল করেছি ও আন্তর্জাতিক মানের করার চেষ্টা করছি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একাডেমির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে এবং আরও বাড়বে বলে আমরা আশা করছি। এখানে আন্তর্জাতিক মানের ট্রেনিং নিয়ে ক্যাডেটরা দেশে-বিদেশে যেন কাজ করতে পারে সেই ব্যবস্থা করেছি। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছি।
এসময় তিনি বলেন ‘জলপথ হলো বাণিজ্যের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ও প্রয়োজনীয় একটি মাধ্যম। জলপথে পণ্য পরিবহনের সুযোগ না থাকলে অর্থনীতি স্থবির হয়ে যেত। আমরা নৌ পথকে আরও সচল করার পদক্ষেপ নিয়েছি।’ ‘১৯৭৪ সালে সমুদ্রসীমা আইন করে দিয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধু, জাতিসংঘেরও তখন এই আইন হয়নি। কিন্তু পরের সরকারগুলো এ বিষয়ে কোনও উদ্যোগ নেয়নি। আমরা ক্ষমতায় এসে এ সংক্রান্ত পদক্ষেপ নেই। বিশাল সমুদ্রসীমা অর্জন করি। অভ্যন্তরীণ নৌ পথকে আমরা আরও সচল করে দিচ্ছি।’
মেরিন একাডেমির ক্যাডেটদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তোমরা বিরাট দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছো। সমুদ্রচারণ খুব চ্যালেঞ্জিং। তবে তোমরা যে দেশের কাজ করো, সেই দেশের নিয়ম মেনে চলতে হবে। বাংলাদেশের সুনাম যেন অক্ষুণ্ন থাকে, দেশের ভাবমূর্তি যেন উজ্জ্বল হয়।
তিনি আরো জানান, বর্তমানে দেশে সরকারি পাঁচটি ও বেসরকারি ছয়টি মেরিন একাডেমি রয়েছে। আরও চারটি চালু হবে। সরকার মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি চালু করেছে। জাহাজ চলাচলে উচ্চতর শিক্ষার প্রবর্তনের জন্য ২০১৩ সালে আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি’। এর আওতায় বিদ্যমান তিন বছর মেয়াদী ব্যাচেলর অব মেরিটাইম সাইন্স পাস ডিগ্রি কোর্সকে চার বছর মেয়াদী অনার্স কোর্সে উন্নীত করা হয়েছে। পাশাপাশি ‘মাস্টার অব মেরিটাইম সাইন্স’ ডিগ্রি কোর্স চালু করা হয়েছে।
কর্মক্ষেত্রে সততা, দক্ষতা এবং পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জল করতে মেরিন ক্যাডেটসহ প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০১৯-২০ অর্থ বছরে ১৬৫ কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের মধ্যে একাডেমির পতেঙ্গা-প্রান্তে দৃষ্টিনন্দন প্রবেশপথ নির্মাণ, দুইটি প্রশিক্ষণ বোটের কমিশনিং এবং পোস্ট-সি ক্যাডেট বন্টকের নবায়নের কথা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একাডেমির লেকে দুটি ট্রেনিং লাইফবোটের কমিশনিং এবং পোস্ট-সি ক্যাডেটদের জন্য ১২০ জন ধারন ক্ষমতাসম্পন্ন নবরূপায়িত বন্টক উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী করোনা পরিস্থিতির প্রসঙ্গে বলেন, ‘করোনার কারণে সারা বিশ্ব যেখানে স্থবির আমরা অর্ধনীতির চাকা সচল রাখতে পেরেছি। করোনার টিকা আনতে পেরেছি অনেক উন্নত দেশের আগে। যদিও টিকাদান কর্মসূচি চলছে, তবুও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। টিকা দেওয়ার পর মনে করবেন না সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে।’