আমনের বাম্পার ফলন হলেও ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদের’ খবরে চিন্তিত গলাচিপার আমন ধান চাষিরা। আমনের ভরা মৌসুম হওয়ায় এখন সকল ধান প্রায় পেকে গেছে। যাও বাকি আছে আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে তা সব ধান কাটা হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় হলে সর্বনাশ হবে কৃষকদের। অপরদিকে শুক্রবার ঘূর্ণিঝড়েরর প্রভাবে নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পায়। এতে ডুবে যায় অনেক ফসলি জমি।
এদিকে উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ঘূর্ণিঝড়েরর আগেই যে সকল ধান ৭৫ থেকে ৮০ ভাগ পেকে গেছে তা কেটে ফেলার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। এর পরেও কৃষকের দুশ্চিন্তা বেড়েইে চলছে। সংশ্লিষ্ট কৃষক ও উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
গলাচিপা উপজেলার সদর ইউনিয়নের চর কারফারমার কৃষক চুন্নু পেয়াদা বলেন, আমি সাড়ে ছয় একর জমিতে আমন ধান চাষ করছি। এর মধ্যে এক একর জমির আমন ধান কাইট্টা আনছি। এহনো আমার প্রায় পাঁচ একর জমির ধান ক্ষেতে আছে। এগুলা কাটতে এহনো ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগবে। বইন্যার খবর হোনার পর থেইক্কা ঘুম অয় না। পানি বা বাতাস অইলেই আমার সব ধান নষ্ট অইয়া যাইবে। আমার সব শ্যাষ অইয়া যাইবে।
তিনি আরো বলেন, আমি ধান ছাড়াও তিন একর জমিতে আগাম তরমুজের চাষ করছি। চারায় চারটা কইররা পাতা ছাড়ছে। বইন্যা অইলে আমার সব শ্যাষ অইয়া যাইবে বাজান। আমার রাস্তায় ভিক্ষা করা ছাড়া উপায় থাকবে না।
একই এলাকার কৃষক রফিক গাজী বলেন, আমি ছয় একর জমিতে আমন ধান চাষ করছি। কিন্তু বইন্যার খবর পাইয়া চিন্তায় আছি। এহন আল্লায় যদি রক্ষা করে করবে হেইয়া না অইলে সব শ্যাষ অইয়া যাইবে।
গলাচিপা উপজেলা কৃষি অফিসার আরজু আক্তার বলেন, গলাচিপা উপজেলায় আবাদ যোগ্য মোট জমি ৪২ হাজার ৯৪৬ হেক্টর। এর মধ্যে ৪২ হাজার হেক্টর জমিতেই আমন চাষ হয়েছে। এসব জমিতে প্রতি হেক্টরে উচ্চ ফলনশীল ধান পাঁচ টন এবং স্থানীয় জাতের প্রতি হেক্টরে ৩ থেকে সাড়ে ৩ টন ধান উৎপাদন হয়। ঘূণিঝড় ‘জাওয়াদ’র খবর পেয়েই কৃষকদের কাছে আমরা বার্তা পাঠিয়েছি। যাদের ধান ৮০ ভাগ পেকে গেছে সেগুলো দ্রুত কেটে ফেলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া যারা আলু চাষ করছে কিন্তু বীজ রোপণ করেনি তারা যেন একটু পরে চাষ করেন।