গত ১৫ জুলাই বন্ধুদের কাছে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি আমার ছেলে রনি (২২)। সোমবার দুপুরে রনির মা রেহেনা বেগম মির্জাপুর প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের কাছে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এসব কথা বলেন। এসময় রনির খালা রিনা বেগমও উপস্থিত ছিলেন। আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দেন। গত সাড়ে চার মাস ধরে কান্না করতে করতে চোখের পানি ফুরিয়ে গেছে। এখন কান্না করলেও সে চোখে পানি আসে না। ছেলেকে ফিরে পেতে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
সাড়ে চার মাস ধরে নিখোঁজ থাকা রনি এবার বাঁশতৈল খলিলুর রহমান কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। কথা বলতে বলতে ছেলের ছবি মোবাইল ফোনে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন রেহেনা বেগম। রনি মির্জাপুর উপজেলার তরফপুর ইউনিয়নের ডৌহাতলী বড়চালা গ্রামের মৃত. দুলাল মিয়ার ছেলে।
রনির মা রেহেনা বেগম ও খালা রিনা বেগম জানান, রনির বয়স যখন ৫ বছর তখন বাবা মারা যান। ছেলের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে মা গোড়াই মাসাফি ফ্যাক্টরিতে ১০ বছর চাকরি করেন। এরপর এক বছর অটো ব্রিকসে কাজ করেন। দরিদ্র পরিবারের সন্ত্মান হওয়ায় লেখাপড়ার পাশাপাশি রনিও মায়ের সাথে অটো ব্রিকসে কাজ করতো। গত ১৪ জুলাই কয়েকজন বন্ধু তাকে চারটি টি-শার্ট ও একটি কালো জিন্স প্যান্ট উপহার দেয়। ১৫ জুলাই বিকেলে ওই কালো জিন্স প্যান্ট ও জলপাই রংয়ের টি-শার্ট পরে বন্ধুদের দেখাতে রনি বাড়ি থেকে বের হয়। ওই দিন রাত আনুমানিক ২টার দিকে রনির মুঠোফোনে ফোন দিলে সাব্বির নামে এক বন্ধু রিসিভ করে। কয়েক বার ওই নম্বরে ফোন দিয়ে রনিকে চাইলেও অপর প্রান্ত থেকে কেবল বলে, কাক্কি, আমি রনি না সাব্বির। পরের দিন সকালে সাব্বিরের বাড়িতে গিয়ে রনি কোথায় জানতে চাইলে সাব্বির বলে, আমি জানি না। পরে গ্রামের লোকজনের উপস্থিতিতে রনির নম্বরে ফোন দিলে সাব্বিরের মুঠোফোন বেজে উঠে। এরপর সকলেই ধারণা করেন, দুর্বৃত্তরা রনিকে গুম করে রনির নম্বর সাব্বিরের মোবাইল ফোনে ডাইভার্ট করেছে। তখন থেকেই রনি নিখোঁজ।